প্রযুক্তির যুগে বাংলার লাঙল-গরু দিয়ে হাল চাষ প্রায় বিলুপ্ত



একটা সময় ছিল যখন লাঙ্গল ও বলদ ছাড়া জমি তৈরির কথা ভাবাই যেত না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা হারিয়ে যায়। তবে বাংলার এই অতীত ঐতিহ্যের চিত্র এখনো দেখা যায় নড়াইলের বিভিন্ন গ্রামে। চিত্রা, নবগঙ্গা, কাজলা, আফরা, নলিয়া ও মধুমতি নদীগুলি প্রাচীনকাল থেকেই কৃষি কাজের জন্য লাঙ্গল, লাঙ্গল ও মই দিয়ে পাড়ি দেওয়া হত।

এ অঞ্চলের গৃহিণীরা কোমরে খাবারের হাঁড়ি আর হাতে পানির বোতল নিয়ে শাড়ি পরতেন এবং সকালে মাঠের আঁকাবাঁকা পথ ধরে হালচাষিতে খাবার নিয়ে যেতেন। কৃষকরা কাক ভোর থেকে ক্ষেত চষে দিত, বা জমিতে বীজ বপন করত। জমি চাষে গরুর লাঙল ও মই ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি একটি মানুষ এবং এক জোড়া গরু বা মহিষ নিয়ে গঠিত।

একটা সময় ছিল যখন লাঙ্গল ও বলদ ছাড়া জমি চাষাবাদ করা অসম্ভব ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা হারিয়ে যায়। তবে বাংলার এই অতীত ঐতিহ্যের চিত্র এখনো দেখা যায় নড়াইলের বিভিন্ন গ্রামে। চিত্রা, নবগঙ্গা, কাজলা, আফরা, নলিয়া এবং মধুমতি নদীগুলি প্রাচীনকাল থেকেই কৃষি কাজের জন্য লাঙল, লাঙ্গল এবং মই দিয়ে পাড়ি দেওয়া হত।

এ অঞ্চলের গৃহিণীরা কোমরে খাবারের হাঁড়ি আর হাতে পানির বোতল নিয়ে শাড়ি পরতেন এবং সকালে মাঠের আঁকাবাঁকা পথ ধরে হালচাষিতে খাবার নিয়ে যেতেন। কৃষকরা ভোরবেলা ক্ষেত লাঙল, বা ক্ষেত বপন করত। জমি চাষে গরুর লাঙল ও মই ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি একটি মানুষ এবং এক জোড়া গরু বা মহিষ নিয়ে গঠিত।

বাবা-মায়ের পুরনো স্মৃতি আঁকড়ে ধরে সময় কাটাচ্ছেন অনেকেই। সম্প্রতি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চাঁদকাঠি মাঠে বিলুপ্তপ্রায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর লাঙল দিয়ে জমি চাষ করতে দেখা গেছে এক কৃষককে। তিনি চাঁদকাঠি গ্রামের পেশাদার হালচাষি মিজানুর শেখ।

তিনি বলেন, বাবা-দাদার পেশা তিনি ছাড়েননি। চাষের জন্য এক জোড়া বলদ, একটি লাঙ্গল-জোয়াল, একটি মই, একটি লাঠি এবং একটি গরুর মুখ প্রয়োজন। গরুর লাঙল দিয়ে মাটির গভীরে গিয়ে মাটি উল্টে দিন। উপরের মাটি নিচে পড়ে নিচের মাটি উঠে যায়। এতে জমিতে ঘাস কমে যায় এবং চাষের সময় জমিতে গোবর পড়ে, একদিকে যেমন জমিতে জৈব সারের চাহিদা মেটে, তেমনি ফসলও ভালো হয়।

মাঠে গরু আর লাঙল দিয়ে হাল চাষ করছেন হালচাষী মিজানুর শেখ 



তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তিন-চার বিঘা জমিতে গরু দিয়ে চাষ করি। এলাকার প্রায় ১৭-২০ গ্রামের মধ্যে আমিই একমাত্র পেশাদার হালচাষি। সারা বছর টাকার বিনিময়ে গরুর লাঙল দিয়ে অন্যের জমি চাষ করি। তবে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার চালু হওয়ায় গরু দিয়ে লাঙল চাষের কদর কমে গেছে। কম সময়ে বেশি জমি চাষ করতে পারায় জমির মালিকরা ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন। যে কৃষকরা গরু দিয়ে লাঙ্গল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত তারা সময়ের সাথে সাথে পেশা পরিবর্তন করেছে।



জেলার কনকাদিয়া ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গা গ্রামের আরেক পেশাজীবী হালচাষী রঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, "আমাদের এলাকায় অনেক জমি আছে যেগুলো খাল জুড়ে, নিচু এলাকায় নরম ভেজা জায়গা বা ছোট উঁচু জমি। যেখানে চাষাবাদ হয় না। ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে সম্ভব।তাই আমরা এসব জমিতে লাঙ্গল ও গরুর লাঙ্গল ব্যবহার করি।এছাড়া গরুর গোবর মাটির গভীরে যায় যা মাটির উর্বরতার জন্য ভালো।এ কারণে গরুর লাঙল দিয়ে চাষের চাহিদা ও কদর রয়েছে। এই এলাকায়.

এ বিষয়ে কৃষি অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, এমন কিছু জমি থাকতে পারে যেখানে ট্রাক্টর পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়। তাই কৃষক প্রয়োজনে এসব জমিতে লাঙ্গল ও গরুর লাঙল ব্যবহার করতে পারেন। তবে কৃষির যান্ত্রিকীকরণের যুগে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে।
Powered by Blogger.